
মৌলভীবাজারের কুশিয়ারা নদী গর্ভে চলে গেছে গ্রামের ১৫টি ঘর বিলীন হয়ে প্রায় দেড়শো পরিবার ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন। মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের ছিক্কাগাঁও গ্রামের প্রায় সিংহভাগ জায়গা নদীতে ধসে পড়েছে। কিছু ঘরবাড়ি মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে। গ্রামের প্রায় দেড়শ পরিবার দিন মজুর নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছেন। অধিকাংশ মানুষ খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছেন। এদিকে নদী ভাঙ্গনের ঘটনায় দেড় মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত জেলা প্রশাসন কিংবা বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সরেজমিন পরিদর্শন ও বাড়ি হারা নিঃস্ব পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়নি বলে জানিছেন ক্ষতিগ্রস্থরা।
কুশিয়ারা পাড়ে গেলে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তারা সবাই দিনমজুরের কাজ করেন পাশের কালারবাজারে। ঘর হারিয়ে পাশের খোলা আকাশের নিচে খড়কোটো দিয়ে বসবাস করছেন তারা। ঘর হারিয়ে নির্ঘুম রাত পাড় করা প্রত্যেক মানুষের চোখে দেখা যায় বেদনা ছাঁপ। এছাড়াও নদী পাড়ের অন্যান্য এলাকা মিলে নদী ভাঙ্গনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান হবে প্রায় ২৫ কোটি টাকার। কুশিয়ারা নদীর জেলার শেরপুরসহ অন্যান্য এলাকায় নদী ভাঙ্গন দেখা দিলে তড়িগড়ি করে পাউবো জিও ব্যাগ কিংবা ব্লকের আওতায় এনে ক্ষতিগ্রস্থদেও দুশ্চিন্তা মুক্ত করেন। ছিক্কাগাও ভাঙ্গনের ৪৫দিন অতিবাহিত হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড এগিয়ে না আসায় স্থানীয়রা কঠোর সমালোচনা করেছেন।
জানা যায়, উত্তরভাগ ইউনিয়নের জুগিকোনা,কেশরপাড়া,সুনামপুর, উমরপুর, বেড়কুড়ি ও শাহাপুর গ্রামের পাড় ভেঙ্গে আরও ৫০টির মত ঘর তলিয়ে গেছে। তলিয়ে যাওয়া জমি বাড়ি-ঘরসহ সবমিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় ২৫ কোটি টাকা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয়রা। ছিক্কাগাঁও গ্রামের জমিসহ তলিয়ে যাওয়া ঘর-বাড়ির ক্ষয়ক্ষতির পরিমান হবে প্রায় ১ কোটি টাকার।
নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ আছমা বেগম জানান “আমরা দিন আনি দিন খাই” । “এমতাবস্থায় বাড়তি জমি কিনে ঘর বানিয়ে বসবাস করার মত আমাদের সম্বল নাই”।
ভাঙ্গন কবলিত ছিক্কাগাঁও গ্রামের এনামুল হক, তকবির মিয়া,সেলিনা বেগম ও বলেন, মাথা গোজার একমাত্র সম্বল হারিয়ে খোলা আকাশের নীচে বাস করছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কারও সহযোগীতা পাইনি। আমরা গরীব হয়ে কি অপরাধ করেছি।
আরকান আলী বলেন, যতটুকু ভেঙ্গেছে ওই জায়গাসহ যদি এখনি পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্লকের আওতায় নিয়ে না আসে তবে গ্রামের আরও বেশ কটি জায়গা ভেঙ্গে নদীতে তলিয়ে যাবে।
মৌলভীবাাজর পানি উন্নয়ন বোর্ডেও নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ খালেদ বিন অলীদ বলেন, কালারবাজারসহ ওই জায়গা ভেঙ্গে যাবার বিষয়টি জেনেছি। নদী ভাঙ্গন কবলিত জায়গা ব্লকের আওতায় নিয়ে আসতে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।