ঢাকা ০২:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২
শিরোনাম ::
Logo দুই দফা না মানলে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের Logo কুমিল্লায় জামায়াত ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে হত্যা, মরদেহ নিয়ে মানববন্ধন Logo সাংবাদিক কন্যা জামিমা আলীর বিবাহ সম্পন্ন,শুভেচ্ছায় ভাসছেন নব দম্পতি। Logo দেশের রাজনৈতিক আকাশে নতুন করে মেঘের আবির্ভাব হয়েছে: মান্না Logo জনগণই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে: যুক্তরাষ্ট্র Logo ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে বিএনপি: আসিফ নজরুল Logo বরিশালে ৬ দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ Logo ছয় দাবিতে সিলেট পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ Logo বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতেই হবে: প্রধান উপদেষ্টা

বরিশালে ৬ দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

বরিশালে ছয় দাবিতে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

বুধবার ১৬ই এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শহরের নথুল্লাবাদ বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এ কারণে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।প্রায় ৩ ঘটিকা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক হাজার শিক্ষার্থী শহরের বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বরিশাল-ঢাকা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় বরিশাল-ঢাকা, বরিশাল-খুলনা,বরিশাল -কুয়াকাটা রুটসহ শহরের প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বরিশালের রুটে চলাচল করে দূরপাল্লার কোচ এবং আন্তজেলা রুটে চলাচল করা বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা আটকা পড়ে। এ ঘটনায় শহরজুড়ে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়।

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী সড়ক অবরোধ করেছে। এর আগে ছয় দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছিলেন। এমনকি ছয় দফা দাবিতে তারা সড়কে নেমেছিলেন, আজও একই দাবিতে সড়কে অবস্থান নিয়েছে।’

নথুল্লাবাদ বাস স্ট্যান্ডে সড়ক অবরোধকারীদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ-টিএসসিসহ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতাভুক্ত শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।

বরিশাল পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী শফিকুল আলম জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানসহ দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কর্মরত জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি দিয়ে সম্প্রতি হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন। এই রায় বাতিল চান তারা। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ২০২১ সালে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

শিক্ষার্থীদের ছয় দাবিঃ

জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।

দ্বিতীয় দাবি, ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।

তৃতীয় দাবি, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

চতুর্থ দাবি, কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোয় অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের পঞ্চম দাবি, স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে। আর ষষ্ঠ দাবি, পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নত মানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

দুই দফা না মানলে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের

বরিশালে ৬ দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

আপডেট সময় : ১২:০১:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

বরিশালে ছয় দাবিতে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

বুধবার ১৬ই এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শহরের নথুল্লাবাদ বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এ কারণে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।প্রায় ৩ ঘটিকা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক হাজার শিক্ষার্থী শহরের বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বরিশাল-ঢাকা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় বরিশাল-ঢাকা, বরিশাল-খুলনা,বরিশাল -কুয়াকাটা রুটসহ শহরের প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বরিশালের রুটে চলাচল করে দূরপাল্লার কোচ এবং আন্তজেলা রুটে চলাচল করা বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা আটকা পড়ে। এ ঘটনায় শহরজুড়ে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়।

কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী সড়ক অবরোধ করেছে। এর আগে ছয় দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছিলেন। এমনকি ছয় দফা দাবিতে তারা সড়কে নেমেছিলেন, আজও একই দাবিতে সড়কে অবস্থান নিয়েছে।’

নথুল্লাবাদ বাস স্ট্যান্ডে সড়ক অবরোধকারীদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ-টিএসসিসহ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতাভুক্ত শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।

বরিশাল পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী শফিকুল আলম জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানসহ দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কর্মরত জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি দিয়ে সম্প্রতি হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন। এই রায় বাতিল চান তারা। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ২০২১ সালে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

শিক্ষার্থীদের ছয় দাবিঃ

জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।

দ্বিতীয় দাবি, ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।

তৃতীয় দাবি, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

চতুর্থ দাবি, কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোয় অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের পঞ্চম দাবি, স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে। আর ষষ্ঠ দাবি, পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নত মানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।