
চিকিৎসা সেবা একটি মহান পেশা। মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করলেও সবাই ব্যক্তি ও পেশাগত জীবনে সুনাম কিংবা সুখ্যাতি বয়ে আনতে পারে না। কেউ কেউ মানব ধর্ম কিংবা মানবিকতা প্রাধান্য দিতে গিয়ে নিজের ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছাগুলোকেও জলাঞ্জলি দিয়েছেন। কর্মক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে ভালো মানুষ হয়ে ওঠা। কিন্তু সেটা ক’জন পারে। অনেকে তার নিজের কর্মগুনে অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে যান। নামের পেছনে নানা উপাধির তকমাও পেয়ে থাকেন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। যার ফলে রাতারাতি বিখ্যাতও হয়ে যান তারা।
তেমনি আজ কথা বলব, একজন এমবিবিএস চিকিৎসকের কথা। যিনি এই পেশায় থেকেও মানব সেবার ব্রত নিয়ে অভিজাত শহরাঞ্চল ছেড়ে এসেছিলেন গ্রামাঞ্চলে। তার লক্ষ্য ছিল একটাই-সাধারণ মানুষের মাঝে সেবা পৌঁছে দেওয়া। যা তিনি আজ অনেকাংশেই এর বাস্তব রূপও দিয়েছেন নিজ কর্মগুনে। সাধারণ মানুষের মাঝে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। হয়েছেন সবার সেরা, সেরাদের সেরা। বেশ কয়েক বছর যাবৎ সিলেট সদরের বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতাল সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অর্থোপেডিক্স সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার হিসেবে স্বাস্থসেবা দেওয়ার পাশাপাশি মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেও অনেককেই সহযোগিতা করে থাকেন এই গুনী চিকিৎসক। ধনী-গরীব, নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ সবার মধ্যে তিনি হয়ে উঠেছেন বিশ্বস্ত বন্ধু। তাই তো রাতারাতি সাধারণ মানুষের কাছে তিনি মানবিক ডাক্তার বলেও গোটা মৌলভীবাজার জেলার মধ্যে আলাদা একটা পরিচিতি পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, তিনি ২০০১ সালে রাজনগর আইডিয়াল স্কুল থেকে এস এস সি পাস করে , ২০০৩ সালে সিলেট এমসি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন।তিনি ২০১০ সালে রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। পরবর্তিতে তিনি ইংল্যান্ডের বিখ্যাত চেষ্টার ইউনিভার্সিটি থেকে এম.এস.সি(অর্থোপেডিক্স) ডিগ্রি অর্জন করেন ।
তিনি চিকিৎসা সেবায় নিত্যনতুন কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে এখানকার ছিন্নমূল হতদরিদ্র মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেন । রোগীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার, স্বাস্থ্য সেবায় গুণগত পরিবর্তন আনা এবং সেবা প্রার্থীদের আন্তরিকতা দেখানোর মধ্য দিয়ে একটি বিশ্বস্ততার জায়গায় এনে দিয়েছেন।
তিনি ১৯৮৬ সালের ১২ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের আদিনাবাদ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মোঃ সবুর মিয়া ব্যবসায়ী ছিলেন এবং মা ফাতেহা বেগম একজন গৃহীনি ছিলেন।
একজন ভালো চিকিৎসক হতে গেলে একজন মানুষের মধ্যে অনেকগুলো গুন বিদ্যমান থাকতে হয়, যা ডাঃ জাবের আহমদ এঁর মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে।
তিনি দীর্ঘ বিন যাবৎ মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার টেংরা বাজারে প্রতি রবিবার প্রায় শতাধিক রুগী কে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেংরা বাজারের একজন রুগী বলেন, আমি আমার মা কে নিয়মিত তার কাছে চিকিৎসা নেই। তিনি খুব ভালো মানুষ এবং একজন মানবিক মানুষ। তার সঙ্গে কথা বললেও রোগীর অর্ধেক রোগ সেরে যায়। আমরা তার মঙ্গল কামনা করি।
ডাঃ জাবের আহমদ বলেন, বরাবরের মতোই নিঃস্বার্থভাবে সাধারণ মানুষের আমৃত্যু সেবা করতে চাই। গরীবদেরকে সেবা ও সহযোগিতা করি, ভবিষ্যতেও করতে চাই। এতে আমার ভালো লাগে। মানব সেবাই হচ্ছে আমার মূল লক্ষ্য। তাছাড়া সকল ধর্মও তাই উৎসাহিত করে। তিনি আরও বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে চিকিৎসকরা এখানে এলেও থাকতে চায়না। কিন্তু আমি এসব স্থানে থেকে সেবার ব্রত নিয়ে তাদের পাশে সামর্থের সবটুকু দিয়ে থাকার চেষ্টা করি। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সেবা দেওয়ার মুহুর্তগুলোকে আমি বেশ ভালোই উপভোগ করি।
উল্লেখ্য, এই চিকিৎসক ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক গরীব ও দুস্থ রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া এবং ব্যক্তিগত খরচে তাদের অপারেশন ও ওষুধ দিয়ে থাকেন। তিনি ব্যক্তিজীবনে একজন সুখী মানুষ। সদা হাস্যোজ্জ্বল ও সদালাপী একজন মানুষ তিনি। এর ফলেই তিনি গোটা রাজনগর উপজেলাসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে একজন মানবিক ডাক্তার হিসেবে বেশ সুখ্যাতি পেয়েছেন।